শিল্পীর পুজোনামচা/৪

আত্মীয়তা ত্যাগেও পিছ পা হইনি

দীপক ঘোষ

ওই যে বলেছিলাম ২০০১ সালে আমার কাছে যোধপুর পার্কের কাজ করার আহ্বান এসেছিল! সেই সময় যোধপুর পার্কের পুজোর কর্ণধার ছিলেন সেবু দা (সেবু ঘোষ)। যোধপুর পার্কের দুর্গাপুজোর অত নাম ডাকের প্রাণপুরুষ কিন্তু ছিলেন সেই সেবু দা। আমাকে যখন সেবুদার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তখন জানতে পেরেছিলাম উনি খুব অসুস্থ, বাঁচার চান্স খুবই কম তাই অন্যান্য সকল কমিটির মেম্বাররা সেবুদার শেষ ইচ্ছে রাখার জন্য আমাকে পুজোর কাজটা করতে বলেছিলেন আমার ওই পরিচিতের মাধ্যমে। ওনার ইচ্ছে ছিল যোধপুর পার্কে একটা  realistic কাজ হোক এবং সেটা একটা ধ্বংসপ্রাপ্ত জমিদার বাড়ির পুজো। সময় টা ছিল ২০০১ এর প্রথম দিক। আমি সেই মত জমিদার বাওয়ালি মণ্ডলের ধ্বংস প্রাপ্ত মহল টা করবো বলে ঠিক করে সেবু দা ও সুমন্ত রায় (সোনা) কে দেখাই,ও কি ভাবে করবো real look আনার জন্য সেটাও করে দেখাই। ওনার খুব পছন্দ হয় ব্যাপারটা।  সেই ডেকরেটর বন্ধু কে বলে ছিলাম কাজটা আমি করবো, তুমি অর্থের দিকটা বুঝে নেবে কারণ আমি নির্ভুল estimate দিতে পারবো না। ভাগ্যের পরিহাসে ওনাকে ধরে রাখা গেল না। পুজো কমিটি স্বাভাবিক ভাবেই খুব ভেঙে পড়েছিল, শুধু সেবু দা’র শেষ ইচ্ছে টা পুরণ করাটাই ছিল একমাত্র লক্ষ্য। যেহেতু সেই ডেকরেটরের উদ্দেশ্য ছিল বানিজ্যিক ভাবে ওদের বিয়ে বাড়ির দায়িত্ব নেওয়া তাই ওদের প্রদত্ত বাজেটেই করে দেবার জন্য রাজী হয়ে গেল। সেবার ই সোনা পুজোর secretary হলো (ও তখন খুবই ছোট) আর দীপক দা সাজাবে ওর পুজো মণ্ডপ সেই উৎসাহে নিজের কাজকর্ম ছেড়ে জোর কদমে লেগে পরলো।যদিও বা ওর সঙ্গে বড়রা যেমন আশিস মুখার্জি,  বিজু পারেখ ও ওর বন্ধুরা ছিল। পুজো কমিটির থেকে পূর্ণ সহযোগিতা পেলেও ধাক্কা খেলাম সেই ডেকরেটর বন্ধুর কাছে। যখন ও বুঝলো যে সে কম টাকায় কাজ নিয়েছে তখন বন্ধুর খোলস থেকে বেড়িয়ে ব্যবসায়ীক বুদ্ধি লাগিয়ে কাজটা কমাবার চেষ্টা করেছিল যেটা আমি হতে দিই নি, কারণ আমার কাছে ‘বাকব্রহ্ম’ রক্ষা করাটাই ধর্ম। তাও এক মৃত ব্যক্তি কে দেওয়া কথা।এর ফল হিসাবে ২০০২ এর October পর্যন্ত বাক্যালাপ বন্ধ ছিল আর:২০০২ এ যাতে ওদের কাজ ‘দিলওয়ারা টেম্পল’ না বানাতে পারি তার সব রকম বাঁধার সৃষ্টি করেছিল। ২০০১ এর শেষে আমি decision নিয়েছিলাম হয় আমি এই কাজ করবো না, নতুবা আমার underএ ডেকরেটর কে কাজ করতে হবে যাতে কোনো compromise করতে না হয়। তাতে আমাকে সঙ্গ দিয়ে ছিল একমাত্র সুমন্ত রায় (সোনা)। আজ সোনার জন্যই আমার এত নামডাক! না হলে হয়তো বাধ্য হয়ে আগের মতো Chartered-Cost এর ছাত্র (সঙ্গে B.com) পড়াতে শুরু কোরতাম, (যা বন্ধ করেছিলাম যেদিন ছাত্রের বুক পকেটে সিগারেটের প্যাকেট দেখতে পেয়েছিলাম)।

Share