ভাস্করের চোখে/২

বদলের শর্ত ছিল সুস্থ রুচি

বিমল কুন্ডু

কলকাতার পুজো যখন পাল্টে গেল, কিংবা বদলে যাওয়ার ভাবনাচিন্তা শুরু হল, সেই ভাবনার একটা শর্ত ছিল। তার হল সুস্থ রুচি। সেই রুচিটাকে রাখতে হবে। সুস্থ পরিবেশ গান-টান সব কিছু মিলিয়ে এবং মন্ডপ, ঠাকুর- সবটার মধ্যে রুচিবান বাংলার ঐতিয্য রাখতে হবে। প্রথম বেহালা থেকে শুরু হয়েছিল , বেহালার অমর সরকার, রণো বন্দ্যোপাধ্যায়দের মাথা থেকে তৈরি হলো নতুন ভাবনা । পাশাপাশি চলে এলো মেট্রিয়াল ঠাকুর। যেমন জালের ঠাকুর, পেরেকের ঠাকুর, বরফের ঠাকুর, নানারকম ।অতিষ্ঠ হয়ে এই জায়গা থেকে সরে এলো মানুষ। শিল্পীরা কিন্তু নতুন ভাবনা নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা বন্ধ করেননি। পরিবর্তনের পুজোগুলি পুরুস্কার পেতে লাগলো। তখন এশিয়ান পেইন্টসের বিচারক মন্ডলীতে থাকতেন পূর্ণেন্দু পত্রী, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, বিকাশ ভট্টাচার্য। তাঁরা দু সপ্তাহ ধরে বিচারক করতেন। যখনই ওই পুরস্কার বিজ্ঞাপন ছাপাতো তখন হোর্ডিংয়ে পুজো কমিটির ছবি, খবর কাগজের মধ্যে তাদের পুজো কমিটির ছবি। পুজো কমিটির মাথা গেল খারাপ হয়ে গেল। তারা পুরো ৯০ ডিগ্রি ঘুরে গেল। প্রত্যেকটি পুজো কমিটি ভাবতে শুরু করল নতুন কিছু করবে। তরুণ দে বেহালার দিকে একটা আর্টিস্ট কমিউনিটি তৈরি করেছিল। যেটা পরবর্তীকালে তার প্রোডাকশন হাউস ভবতোষদের মতো ছাত্র ধরে ধরে বেহালার ছোট খাটো পুজো করাতে লাগল তার পরবর্তীকালে বেহালার পুজো এক্সটেন্ড করতে করতে কলকাতার পুজো বেহালার দিকে ফোকাসড হয়ে গেছে। এই করতে করতে শুরু হল আনুষ্ঠানিক খুঁটিপুজো। এর জন্মদাতা কিন্তু সনাতন। সনাতনই খুঁটি পুজো শুরু করেছিল। ওই হাতিবাগানে খুঁটি পুজো করে, ভূমি পুজো করে, লুচি টুচি খাইয়ে শুরু করলো। আলোক আমাদের শ্যমপুকুরের ছেলে গোরাচাঁদ সেন যখন ডাউনে তখন অলোক সেন ফ্ল্যারিশ করল। তার সাথে কাজ করলাম। বলতে গেলে অলোক সেনের মধ্যে অশোক দা’র থিম থাকত। মহম্মদ আলী পার্ক এর মধ্যে যে শুভ-অশুভ ব্যাপারটা, যেমন অনেকগুলো অসুর চিত হয়ে পড়ে যাচ্ছে , ঝড়ে উড়ে যাচ্ছে এসব ভাবনাগুলো সবই অশোকদা’র এবং তার পরবর্তীকালে অলোক সেন নিয়ে নিয়েছিল। অলোক সেন সত্তর এর আগে কৃষ্ণা গ্লাস ফ্যাক্টরীতে সাধারণ ঠাকুর গড়ত। ও যেহেতু আর্ট কলেজে পড়ত তাই ওই ঠাকুরগুলোর মধ্যে আর্টিস্টিক সেন্স থাকত। কমপ্লিটলি কুমরোটুলি ওরিয়েন্টেড কাজ করত। পরবর্তীকালে গোরাচাঁদ আর্ট করত। এগুলো এক একটা স্টেজ।

Share